ঢাকা জেলার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৩ ডাউনলোড
ঢাকা জেলার মাহের রমজান মাসের সেহরি, ইফতারের সময়সূচি ও ক্যালেন্ডার ২০২৩ সালের ইসলামিক ফাউন্ডেশন মোতাবেক জেলা ভিত্তিক আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আপনি চাহিলে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ঠিক ঘড়ির কাঁটার মতো বছর ঘুরে আসে মাহে রমজান। অনাবিল শান্তি ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে এভাবেই মুসলমানের জীবনে প্রতি বছর মাহে রমজান ঘুরে ঘুরে আসে। আরবি ‘রমজ’ মূল ধাতু থেকে রমজান শব্দটি এসেছে। এর অর্থ দহন বা পোড়ানো। আগুন যেমনি কোনো জিনিসকে পুড়িয়ে ফেলে, রোজাও তেমনি মানুষের অসৎ কাজকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। অর্থাৎ রমজানের রোজা মানুষের ভেতর থেকে লোভ-লালসা, পাপ-পঙ্কিলতা ও হিংসা-দ্বেষ দূরীভূত করে তাকে পাক-সাফ হওয়ার সুযোগ এনে দেয়।
শরিয়াহর পরিভাষায় রোজা বলতে বোঝায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারসহ আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। রোজা শুধু হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মতের ওপরই ফরজ হয়নি। এর আগে অন্য ধর্মের অনুসারীদের ওপরও রোজা পালন করার বিধান জারি ছিল। পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও নবী হজরত আদম আঃ রোজা পালন করতেন। দ্বিতীয় আদম বলে পরিচিত হজরত নূহ আঃ এর সময় প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখার বিধান চালু ছিল।
হজরত দাউদ আঃ তাঁর শিশুপুত্রের অসুস্থতার সময় সাত দিন রোজা পালন করেছেন বলে জানা যায়। হজরত মূসা আঃ ও হজরত ঈসা আ: ৪০ দিন করে রোজা রেখেছেন। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে মহররমের নবম ও দশম তারিখ রোজা রাখতেন। মহানবী সাঃ এর হিজরতের পর অর্থাৎ হিজরি দ্বিতীয় সালে মাহে রমজানের রোজা অবশ্য পালনীয় বা ফরজ হিসেবে ঘোষিত হয়।
আল কুরআনে সূরা আল-বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ তা হলে সহজেই অনুধাবন করা যায়, মাহে রমজানের রোজা পালন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কেউ কোনো কারণ ছাড়া রোজা না রাখলে সে ‘ফাসিক’ বলে গণ্য হবে। আর রোজাকে অস্বীকার করলে সে কাফের (অস্বীকারকারী) হিসেবে বিবেচিত হবে।
মাহে রমজানের পুরো মাস তিনটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম ১০ দিন রহমত, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের সময়। এই মাস মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছ থেকে অশেষ রহমত ও করুণা লাভের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়ার সুযোগ আসে রমজান মাসে। এ কথাই মহানবী সাঃ বলেছেন এভাবে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহকারে ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে এবং এমনিভাবে রাতে ইবাদত করে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
যে ব্যক্তি খাওয়া অথবা পান করার সংকল্প করার পর পুনরায় স্থির করল যে, সে ধৈর্য ধরবে। অতএব সে পানাহার করল না। এমন ব্যক্তির রােযা কেবলমাত্র পানাহার করার ইচ্ছা ও সংকল্প হওয়ার জন্য নষ্ট হবে না। আর এ কাজ হল সেই ব্যক্তির মত, যে নামাযে কথা বলতে ইচ্ছা করার পর কথা বলে না, অথবা (হাওয়া ছেড়ে) ওযু নষ্ট করার ইচ্ছা হওয়ার পর ওযু নষ্ট করে না।
যেমন এই নামাযীর ঐ ইচ্ছার ফলে নামায বাতিল হবে না এবং তার ওযুও শুদ্ধ থাকবে, অনুরূপ ঐ রোজাদারের পানাহার করার ইচ্ছা হওয়ার পর পানাহার না করে তার রােযাও বাতিল না হয়ে শুদ্ধ থাকবে। যেহেতু নীতি হল, যে ব্যক্তি ইবাদতে কোন নিষিদ্ধ (ইবাদত নষ্টকারী) কর্ম করার সংকল্প করে, কিন্তু কার্যত তা করে না, সে ব্যক্তির ইবাদত নষ্ট হয় না।